চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব কলাদী জামে মসজিদের ইমামের কক্ষ থেকে ইমামের পুত্রসহ তিন মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় কিছু আলমত জব্দ করা হয়েছে। এখনো চূড়ান্ত করে কিছুই বলতে পারছে না পুলিশ। তবে পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, শ্বাস নিতে না পারায় তাদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনায় মতলব থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। আজ শনিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির বলেন, ওখানে হয়তো কোন স্যাফোলেশন হতে পারে। আমাদের প্রাথমিক ধারণা, ওই কক্ষে যে ব্যাটারি ছিল সে ব্যাটারি থেকে কোনো কারণে ক্যামিক্যাল রিয়েকশনের ফলে ওখানে যদি হাইড্রোজেন সালফাইড বা অন্য কোনো ক্যামিকেলের উৎপাদন বা কার্বোনডাইজ অক্সাইড উৎপাদন বেশি হয়ে যায়- সেক্ষেত্রে অক্সিজেনের ডেফিসেন্সি হলে সেক্ষেত্রে অক্সিজেন নিতে না পারলে এ ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এটি আমাদের প্রাথমিক ধারণা। সিআইডিও আমাদের এমন একটি প্রাথমিক ধারণা দিয়ে গেছে।
সিআইডি থেকে ক্রাইম সিন এ্যানালাইসিস টিম এবং ফরেনসিক টিম এসে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেছে। তারা ঢাকায় গিয়ে সেগুলো পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেবে। সেই সাথে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসার পর সংশ্লিষ্ট সব বিষয় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে আসা যাবে। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ, পিবিআই এ ঘটনা নিয়ে কাজ করছে।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন কুমার আইচ জানিয়েছেন, তিন ছাত্রের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ক্রাইম এ্যানালাইসিস টিম ও ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং তারা কিছু আলামত সিস করেছে। তারা আমাদের কিছু পরামর্শ দিয়ে গেছেন, সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর চাঁদপুরের মতলব দক্ষিন উপজেলার পূর্ব কলাদি জামে মসজিদের ইমামের কক্ষ থেকে আব্দুল্লাহ আল নোমান (৫), রিফাত হোসেন (১৫) ও মো. ইব্রাহীম (১২) নামে ৩ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত নোমান পূর্ব কলাদি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জামাল উদ্দিনের ছেলে, রিফাত হোসেন মতলব উত্তর উপজেলার নুলুয়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে এবং ইব্রাহীম বড়গুনা জেলার নাটশাল গ্রামের কামাল পাটওয়ারীর ছেলে। এর মধ্যে রিফাত ও ইব্রাহীম মতলব ভাঙ্গারপাড় মাদ্রাসার ছাত্র।
ইমাম জামাল উদ্দিন ৫ বছরের শিশু নোমানকে রেখে নামাজ পড়াতে যান। নামাজ শেষে তার কক্ষে প্রবেশ করতে গেলে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ পান। পরে বাহিরে গিয়ে জানালা দিয়ে দেখেন ৩ শিশু অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। পরে দরজা ভেঙে ইমামসহ উপস্থিত মুসল্লিরা অচেতন অবস্থায় ৩ শিশুকে মতলব দক্ষিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রথমে নোমান ও রিফাতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন এবং কিছুক্ষণ পরে ইব্রাহীম মারা যায়।
Leave a Reply